দেশের হাওরগুলোতে প্রায় ২৬০ প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। তার মধ্যে ২০০ প্রজাতির মাছ সুনামগঞ্জের হাওরে পাওয়া যায়। এই অঞ্চলের আশেপাশে কোনো কল-কারখানা না থাকায় পানি দূষিত হয়না। ফলে হাওরের মাছ খুবই সুস্বাদু।






এই অঞ্চলের মাছ এতো জনপ্রিয় যে, দেশের আমিষের চাহিদা পূরণ করে বিশ্বের ৫০-৬০ দেশে রপ্তানি হচ্ছে সুনামগঞ্জের হাওর-নদীর মাছ। হাওরের মৎস্য সম্পদের জন্য এখনও বিখ্যাত সুনামগঞ্জ।






জানা যায়, মৎস্য, পাথর ও ধান সুনামগঞ্জের প্রাণ। প্রায় বহু বছর আগে থেকেই এখানকার হাওরের মাছের সুনাম রয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এখানকার মাছ পৌছে যায়। সুনামগঞ্জকে হাওরের রাজধানী ও মাছের রাজধানীও বলা হয়ে থাকে।






সরেজমিনে দেখা যায়, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বড়দৈই বিলে প্রায় ২৫০ জেলে এ বিলে মাছ ধরার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এখানকার জেলেরা নৌকায় করে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জাল দিয়ে মাছ ধরেন।






এই বিলে রুই, বোয়াল, কাতল, গ্রাসকার্প, চিতল, কালিবাউশ, শোল, গজার, পাবদা, টেংরা, কই, শিং, মাগুরসহ বড় ছোট সব ধরনের মাছ রয়েছে। বর্তমানে শুধু এই বিল থেকেই বছরে প্রায় ৫০০ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয়। যার মূল্য প্রায় ২৫ কোটি টাকা।






সুনামগঞ্জ জেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্র মতে, সুনামগঞ্জে ছোটবড় প্রায় ১ হাজার বিল রয়েছে। এখানকার হাওরে দুইভাবে মাছের উৎপাদন হয়। মুক্ত জলাশয়ে এবং ইজারাদারদের তত্ত্বাবধানে।
দুই বা তিন বছরের জন্য ইজারা নিয়ে স্থানীয় অনেক চাষিরা হাওর-বিলে পোনা ছাড়া, গাছের ডাল দিয়ে অভয়াশ্রম বানানোসহ প্রাকৃতিকভাবে মাছের রক্ষণাবেক্ষণ করেন।






এই দু-তিন বছর পরপর মাছ ধরার কারণে মাছের সাইজ অনেক বড় এবং এর গুণগত মানও ভালো হয়। এতে সব বিল মিলিয়ে বছরে ৯০ হাজার
মেট্রিক টন বিভিন্ন প্রজাতির মাছ উৎপাদন হয়। যার বাজার মূল্য ৫ হাজার কোটি টাকা। ইতোমধ্যে এই অঞ্চলের মাছ দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্বের প্রায় ৫০-৬০টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে।






জেলে আলতাব মিয়া বলেন, জেলার এই ১ হাজার হাওর-বাঁওড়, নদী-নালা ও খাল বিলের বিস্তীর্ণ জলাশয়ে দেশীয় প্রজাতির মাছ বেশি পাওয়া যায়। যা অন্যান্য জেলায় পাওয়া যায় না।
বড়দৈই বিলের ইজারাদার মনোয়ার পীর বলেন, আমাদের এই বিলের মাছ স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানি হয়।






সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা প্রশান্ত দে বলেন, সুনামগঞ্জের হাওরগুলো দেশীয় ছোট ও বড় মাছে ভরপুর। পানি দূষণমুক্ত হওয়ায় এখানকার মাছ প্রাকৃতিক জলজ উদ্ভিদ খেয়ে বড় হয়। তাই এসব মাছ খেতে সুস্বাদু। ফলে এখানকার হাওর ও নদীর মাছ ৫০-৬০টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে।





